মহান আদেশ পূর্ণ করার জন্য আমাদের কি মূল্য প্রদান করতে হবে?
– স্ট্যান পার্কস দ্বারা লিখিত –
যীশু তাঁর শিষ্যদের প্রতি শেষ আজ্ঞায় (মথি ২৮:১৮-২০), সেই সময়কালীন এবং বর্তমান সময়ের – সমস্ত শিষ্যদের জন্য একটি আশ্চর্য পরিকল্পনা স্থাপন করেছিলেন ।
আমরা সেই নামেতে যাই যে নামে স্বর্গে এবং পৃথিবীতে সমস্ত কর্তৃত্ব প্রদান করা হয়েছে । আমরা পবিত্র আত্মার শক্তি গ্রহণ করি, যখন আমরাআমাদের যিরূশালেম, যিহুদীয়া, শমরিয়া (নিকটবর্তী “শত্রু”) এবং পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত লোকদের কাছে যাই । যীশু আমাদেরকে সমস্ত জাতির (এথনে) লোকদের শিষ্য করতে, পিতা – পুত্র – পবিত্র আত্মার নামে তাদের বাপ্তিষ্ম দিতে এবং তিনি যা আদেশ করেছেন সেই সমস্তকিছুর তাদের আজ্ঞা পালন করার জন্য শিক্ষা দিতে আহ্বান করেছেন । এবং তিনি সর্বদা আমাদের সহবর্তী আছেন ।
মহান আদেশ পরিপূর্ণ করার জন্য আমাদের কি মূল্য প্রদান করতে হবে ? “অবশিষ্ট কাজ” উপলব্ধি করার জন্য, আমরা “অগম্য,” “সুসমাচার অপ্রাপ্ত,” “অনিযুক্ত,” এবং “স্বল্প-গম্য” -এর মতো শব্দগুলি ব্যবহার করে থাকি ।
আমরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই শব্দগুলি একটির পরিবর্তে আরেকটি ব্যবহার করে থাকি । এটি অত্যন্ত বিপদজ্জনক হতে পারে, কারণ এইগুলির অর্থ এক নয়, এবং আমরা যখন এগুলি ব্যবহার করি তখন একই অর্থের জন্য ব্যবহার নাও করতে পারি ।
“অগম্য” শব্দটি চিকাগো শহরে মিশিওলজিস্টদের একটি আলোচনা সভায় প্রথম সংজ্ঞায়িত করা হয় ক্ষণিক বাদেই অগম্য লোকদের ধারনাটি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে । এর সংজ্ঞা এইরূপ হয়, “একটি জনগোষ্ঠীর মধ্যে যেখানে কোন মণ্ডলী নেই যারা সেই অঞ্চলে সীমান্ত পর্যন্ত বহিরাগত কোন ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষদের সাহায্য ছাড়া সুসমাচার প্রচার করা যেতে পারে ।”
“সুসমাচার অপ্রাপ্ত,” শব্দটি সাধারণত বহুক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়, যার সংজ্ঞা ওয়ার্ল্ড ক্রিশ্চিয়ান এনসাইক্লোপিডিয়া-তে প্রকাশ করা হয়, কোন জনগোষ্ঠীর মধ্যে এমন লোকদের সংখ্যা নির্ধারণ করার জন্য গাণিতিক সমীকরণ যা তাদের জীবদ্দশায় অন্ততঃ একবার সুসমাচার শোনার সুযোগ করে দেবে । এটি সেই সমস্ত লোকদের সংখ্যার একটি মাপদন্ড যাদের সুসমাচার শোনার সুযোগ হয়েছে । একটি জনগোষ্ঠী, উদাহরণস্বরূপ, ৩০% সুসমাচারপ্রাপ্ত, যার অর্থ হল গবেষকরা হিসাব করেছেন যে ৩০% মানুষ সুসমাচার শুনেছেন এবং ৭০% মানুষ এখনও সুসমাচার শুনেনি । এটি স্থানীয় মণ্ডলীর গুণমান বা তাদের নিজস্ব কাজটি শেষ করার দক্ষতার বিবৃতি নয় ।
“অনিযুক্ত” শব্দটি তৈরি হয়েছিল সম্পূর্ণকৃত কাজ দ্বারা এবং সংজ্ঞায়িত হয়েছিল এক দলগোষ্ঠী যার মণ্ডলী স্থাপনের কৌশল প্রস্তুতকারী কোন দলের অভাব রয়েছে । প্রায় কয়েক লক্ষ মানুষের মধ্যে যদি দুটি বা তিনটি দল রয়েছে যারা মণ্ডলী স্থাপনের কৌশল ব্যবহারের জন্য “নিযুক্ত,” তাহলে এটি “নিযুক্ত” (তবে এটি অবশ্যই যথেষ্ট নয়)। সম্পূর্ণকৃত কাজ অন্যান্য তালিকা থেকে অনিযুক্ত লোকদের তালিকা প্রস্তুত করে ।
“স্বল্প-গম্য” এটি একটি সাধারণ শব্দ যা অবশিষ্ট কাজের মূল বিষয়টিকে প্রকাশ করে । এর কোন নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই, এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়, যখন কোন নির্দিষ্ট সংজ্ঞার প্রয়োজন হয় না ।
কাজটি কি?
২৪:১৪-এর লক্ষ্যটি হল সেই প্রজন্মের অংশীদার হওয়া যারা মহান আদেশ পরিপূর্ণ করবে । এবং আমরা মনে করি এই মহান আদেশ (সমস্ত জাতির মধ্যে শিষ্য তৈরি করা) সম্পূর্ণ করার সর্বশ্রেষ্ঠ উপায় হল সমস্ত জাতি এবং স্থানে ঈশ্বরের রাজ্যের আন্দোলন শুরু করা ।
অগম্য, সুসমাচার অপ্রাপ্ত, অনিযুক্ত এবং স্বল্প-গম্য – এই সমস্ত শব্দগুলি – বিভিন্ন উপায়ে সাহায্যকারী । তথাপি এগুলি বিভ্রান্তিকর এবং এমনকি প্রতিকূল হতে পারে, যা নির্ভর করছে কিভাবে এই শব্দগুলি ব্যবহৃত হচ্ছে ।
আমরা চাই প্রত্যেকে সুসমাচার প্রাপ্ত হোক, কিন্তু শুধু সুসমাচারপ্রাপ্ত নয় । অন্য অর্থে, প্রত্যেকের শুধুমাত্র সুসমাচার শোনাই যথেষ্ট নয় । আমরা জানি যে “প্রত্যেক দেশ, গোষ্ঠী, বংশ ও ভাষার” লোকদের মধ্যে শিষ্য তৈরী হবে (প্রকাশিত বাক্য ৭:৯)।
আমরা দেখতে চাই যে, প্রত্যেক গোষ্ঠীর লোকের কাছে পৌঁছানো গেছে – এমন একটি মণ্ডলী যারা নিজেদের আশেপাশের লোকদের মধ্যে সুসমাচার প্রচার করার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী । কিন্তু আমরা যে এই সবই চাই তা নয় । যোশুয়া প্রজেক্ট বলে যে একটি সুসমাচার প্রাপ্ত লোকদের মধ্যে ২% খ্রীষ্টানরা সুসমাচার প্রচারের কাজ করে থাকে । এর অর্থ হল তাদের হিসাবে সেই ২% লোকেরা ৯৮% অবশিষ্ট লোকদের সুসমাচার প্রচার করতে পারে । এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, কিন্তু আমরা কখনই সন্তুষ্ট হতে পারি না যদি একটি জনগোষ্টীর কেবলমাত্র ২% লোক যীশুর অনুসারী হয় ।
আমরা প্রত্যেক জনগোষ্ঠীকে নিযুক্ত দেখতে চাই কিন্তু কেবলমাত্র নিযুক্ত নয় । আপনি কি চান আপনার শহরের ৫০ লক্ষ বা ১ কোটি মানুষের মধ্যে কেবলমাত্র দুইজন লোক সুসমাচার প্রচারের কাজ করুক ?
মহান আদেশের প্রকৃত ভাষায় এই পদগুলির মধ্যে একটি মূল আদেশ স্পষ্টরূপে ব্যক্ত আছেঃ শিষ্য তৈরি করা (ম্যাথেতিউসাতে)। কেবলমাত্র ব্যক্তিগত ভাবে শিষ্য নয়, কিন্তু একটি জাতিকে শিষ্য করা (এথনে) – একটি সম্পূর্ণ জাতিগত গোষ্ঠী । অন্যান্য ক্রিয়াগুলি (“যাও,” “বাপ্তিষ্ম দেও,” “শিক্ষা প্রদান কর”) যা মূল আদেশকে সমর্থন করে – সমস্ত জাতির লোকদের শিষ্য করা ।
গ্রীক শব্দ এথনোস্ (এথনে শব্দটির একবচন)-এর সংজ্ঞা হল “একটি জাতির লোকসমূহ যারা আত্মীয়তা, সংস্কৃতি এবং সাধারণ ঐতিহ্য, বংশ ও লোকদের দ্বারা একজোট থাকে” । প্রকাশিত বাক্য ৭:৯ পদ, “এথনে” (“জাতি”) শব্দটির একটি চিত্র প্রকাশ করে যে কাদের কাছে পৌঁছাতে হবে, এই পদে আরো তিনটি ব্যাখ্যামূলক শব্দের ব্যবহার করা হয়েছেঃ জাতি, বংশ এবং ভাষা – সাধারণ পরিচয়-সহ বিভিন্ন গোষ্ঠী ।
১৯৮২ সালে লসেন-এর আলোচনায় সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছিলঃ “সুসমাচার প্রচারের উদ্দেশ্যে, একটি জনগোষ্ঠী হল বৃহত্তম দল যার মধ্যে সুসমাচার উপলব্ধি করার বা গ্রহণ যোগ্যতার কোন বাধার সম্মুখীন না হয়েও মণ্ডলী স্থাপনের আন্দোলন হিসাবে ছড়িয়ে পড়ে ।”
আমরা কিভাবে একটি সম্পূর্ণ দেশ, জাতি, বংশ বা ভাষাকে শিষ্য হিসাবে প্রস্তুত করতে পারি ?
আমরা প্রেরিত ১৯:১০ পদে একটি উদাহরণ দেখতে পাই, যেখানে বলা হয়েছে এশিয়াস্থ সমস্ত অঞ্চলের (১ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষ!) যিহুদী এবং গ্রীকেরা দু’বছরের মধ্যে “ঈশ্বরের বাক্য শুনেছিল”। রোমীয় ১৫:১৯-২৩ পদে পৌল বলেছেন যে যিরুশালেম থেকে শুরু করে ইল্লুরিকা পর্যন্ত এমন কোন স্থান ছিল না যেখানে তাঁর সুসমাচার প্রচারের কাজ সম্পূর্ণ হয়নি ।
তাহলে মহান আদেশ পূর্ণ করার জন্য আমাদের কি করতে হবে ? নিশ্চিতভাবে কেবলমাত্র ঈশ্বরই বিচার করতে পারেন যে পরিশেষে কখন মহান আদেশ “পরিপূর্ণ হবে”। তথাপি আমাদের লক্ষ্য হল প্রত্যেক জাতির (এথনোস্) লোকদের শিষ্য তৈরি করা, যার ফলাফল হল মণ্ডলী । শিষ্যেরা নিজের জীবন দিয়ে ঈশ্বরের রাজ্যকে প্রকাশ করবে – মণ্ডলীর ভিতরে এবং বাইরে – তাদের সমাজকে পরিবর্তন করবে এবং নিয়মিতভাবে নতুন লোকদের ঈশ্বরের রাজ্যে নিয়ে আসবে ।
রাজ্যের আন্দোলনে নিযুক্তিকরণ
এই কারণেই যারা ২৪:১৪ দর্শনে অঙ্গীকার করেছেন তাদের মূল লক্ষ্য হল রাজ্যের আন্দোলনে নিযুক্তিকরণ । আমরা উপলব্ধি করেছি যে কেবলমাত্র একটি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত শিষ্য, মণ্ডলী এবং নেতাদের আন্দোলনই সমগ্র সম্প্রদায়, ভাষাগোষ্ঠী, শহর এবং জাতিকে শিষ্য করতে পারে ।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে মিশনের বিষয়ে আমরা কেবলমাত্র জিজ্ঞাসা করেছিঃ “আমি কি করতে পারি ?” কিন্তু আমাদের জিজ্ঞাসা করতে হবেঃ মহান আদেশ পরিপূর্ণ করার ক্ষেত্রে আমাদের দায়িত্ব পালন করার জন্য আমাদের “কি করা উচিত ?”
আমরা শুধু বলতে পারি না, “আমি যাব এবং কিছু মানুষের আত্মা জয় করার প্রচেষ্টা করবো এবং মণ্ডলী স্থাপন করতে শুরু করবো ।” আমাদের জিজ্ঞাসা করতে হবেঃ “কি করলে কোন একটি নির্দিষ্ট এথনোস্ (জাতিকে) অথবা বিভিন্ন এথনে গুলিকে শিষ্য করা যায় ?”
প্রতিকূলতামূলক একাধিক দেশের একটি অঞ্চলে, একটি মিশন দল বিভিন্ন স্থানে সেবা করতে শুরু করে এবং তারা দেখতে পায় যে তিন বছরের মধ্যে ২২০টি মণ্ডলী স্থাপিত হয়েছে । এটি অত্যন্ত উত্তম ফলাফল, বিশেষতঃ তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে কঠিন এবং প্রতিকূলতামূলক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে । কিন্তু এই দলের একটি দর্শন ছিল, যেন তারা নিজেদের সমস্ত অঞ্চলকে শিষ্য হতে দেখতে পারে ।
তাদের প্রশ্ন ছিলঃ “আমাদের প্রজন্মের এই অঞ্চলের সমস্ত লোকদের শিষ্য করার জন্য আমাদের কি মুল্য প্রদান করতে হবে ?” উত্তর ছিল যে একটি দৃঢ় সূচনার (একটি আরম্ভ – সমাপ্তি নয়) জন্য প্রায় ১০,০০০ মণ্ডলী স্থাপন করা প্রয়োজন । সেকারণে, তিন বছরে ২২০টি মণ্ডলী স্থাপন করা যথেষ্ট নয়!
ঈশ্বর তাদের দেখিয়েছেন যে তাদের অঞ্চলের সর্বত্র পৌঁছানোর জন্য তাদের এমন মণ্ডলী স্থাপন করতে হবে যারা দ্রুত গতিতে নিজেদের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারে । তারা সমস্তকিছু পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত ছিল । যখন ঈশ্বর সেখানে সিপিএম প্রশিক্ষকদের প্রেরণ করেছিলেন, তারা ঈশ্বরের বাক্য থেকে যাচাই করেন ও প্রার্থনা করেন এবং কিছু মৌলিক পরিবর্তন করেন । ফলস্বরূপ আজ পর্যন্ত, ঈশ্বর সেই অঞ্চলে ৭,০০০টির ও এর বেশি মণ্ডলী স্থাপন করেছেন ।
একজন এশিয়া নিবাসী পালক ১৪ বছরে ১২টি মণ্ডলী স্থাপন করেছিলেন । এটি উত্তম ফলাফল ছিল, কিন্তু এটি সেই অঞ্চলের হারিয়ে যাওয়া মানুষের অবস্থার পরিবর্তন করতে পারছিল না । ঈশ্বর তাকে এবং তার সহকর্মীদের দর্শন দিলেন যে সমগ্র উত্তর ভারতের কাছে ঈশ্বরের বাক্য পৌঁছানোর কাজে তারাও অংশীদার হবে । তারা প্রথাগত পদ্ধতিগুলি নিজেদের মধ্যে থেকে অপসারণ করার কঠিন প্রচেষ্টা করতে এবং আরো বেশী করে বাইবেল-ভিত্তিক কৌশলগুলি শিখতে শুরু করলেন । আজকে প্রায় ৩৬,০০০ মণ্ডলী সেখানে স্থাপিত হয়েছে । এবং এটি কেবলমাত্র সেই কাজের সূচনা যার জন্য ঈশ্বর তাদের আহ্বান করেছেন ।
পৃথিবীর আরেকটি সুসমাচার অপ্রাপ্ত স্থানে ঈশ্বর ব্যাপকভাবে আন্দোলনের কাজ শুরু করেছেন যেখানে একটি ভাষাগোষ্ঠী থেকে সাতটি ভিন্ন ভাষাগোষ্ঠী এবং পাঁচটি বড় শহরে আন্দোলনের কাজ প্রসারিত হয়েছে । তারা প্রায় ১ কোটি থেকে ১.৩ কোটি মানুষকে ২৫ বছরের মধ্যে বাপ্তিষ্ম প্রদান করেছেন কিন্তু এটি তাদের মূল লক্ষ্য নয় । যখন জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে বহুল পরিমাণ মানুষকে ঈশ্বরের রাজ্যে নিয়ে আসার পরে তাদের অনুভূতিটি কেমন ছিল, তাঁদের নেতাদের মধ্যে একজন মন্তব্য করেন, “যারা পরিত্রাণ-প্রাপ্ত হয়েছে, তারা আমার লক্ষ্য নয় । আমি তাদের উপরে লক্ষ্য রাখি যাদের কাছে পৌঁছতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি – কোটি কোটি মানুষ এখনও অন্ধকারে আছে কারণ আমাদের যা করা উচিত ছিল আমরা তা এখনও করতে পারিনি” ।
এই আন্দোলনের একটি চিহ্ন হল একজন ব্যক্তি অথবা একটি দল ঈশ্বরের-আকারযুক্ত দর্শন গ্রহণ করে । যেন একটি অঞ্চলের বিভিন্ন দেশগুলি ঈশ্বরের রাজ্য দ্বারা পরিপূর্ণ হতে পারে । সমগ্র সুসমাচার অপ্রাপ্ত গোষ্ঠীর – ৮০ লক্ষ, অথবা ১ কোটি ৪০ লক্ষ অথবা ত্রিশ লক্ষ সংখ্যা যুক্ত – লোকদের সুসমাচারপ্রাপ্ত হতে দেখা – যার জন্য প্রত্যেকে যেন সুসমাচারের প্রতি নিজেদের প্রতিক্রিয়া দেবার সুযোগ পায় । তারা জিজ্ঞাসা করেঃ “আমরা কি করতে পারি ?” তা নয়, কিন্তু “কি ঘটতে পারে ?” যার ফলাফল অনুযায়ী তারা ঈশ্বরীয় পদ্ধতির উপযুক্ত এবং তাঁর শক্তিতে পরিপূর্ণ হয় । তারা স্বয়ং-বৃদ্ধিপ্রাপ্ত মণ্ডলী স্থাপনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যার ফলে নতুন শিষ্য তৈরি হয় এবং সমগ্র গোষ্ঠীর পরিবর্তন হয় ।
প্রতিটি অগম্য লোকদের মাঝে এবং স্থানে পৌঁছানো ২৪:১৪ আন্দোলনের প্রাথমিক লক্ষ্য নয় । এটি প্রত্যেক ব্যক্তি ও স্থানের কেবলমাত্র সূচনা (উদাহরণ, সেইস্থানের জনগোষ্ঠীগুলি)। আমরা কখনও সমস্ত জনগোষ্ঠীর মধ্যে কাজ শেষ করতে পারব না, যতক্ষণ না সমস্ত জনগোষ্ঠীর মধ্যে সেইকাজ শুরু হচ্ছে ।
মহান আদেশ পূর্ণ করার জন্য কি মুল্য প্রদান করতে হবে ?
প্রত্যেকটি মানুষ এবং স্থানে রাজ্যের আন্দোলনের সূচনা দেখতে হলে, আমরা কেবলমাত্র কৌশল এবং পদ্ধতি নির্ধারনের উপরে নির্ভরশীল হয়ে থাকতে পারি না । ঈশ্বর প্রারম্ভিক মণ্ডলীকে যে গতিশীলতা দিয়েছিলেন তা অনুসরণ করার জন্য আমাদের প্রস্তুত এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে । সেই সময়ে সেই অঞ্চলে এমন কোন স্থান বাকী ছিল না যেখানে যীশু খ্রীষ্টের সুসমাচার প্রচার করা হয়নি ।
সেই পরিস্থিতিতে ফেরার জন্য আমাদের মণ্ডলীগুলিকে কি মূল্য প্রদান করতে হবে ?
আর তাহারা প্রেরতিদের শিক্ষায় ও সহভাগিতায়, রুটি ভাঙ্গায় ও প্রার্থনায় নিবিষ্ট থাকিল । তখন সকলের ভয় উপস্থিত হইল, এবং প্রেরিতগণ কর্তৃক অনেক অদ্ভুত লক্ষণ ও চিহ্ন-কার্য্য সাধিত হইত । আর যাহারা বিশ্বাস করিল, তাহারা সকলে একসঙ্গে সমস্তই সাধারণে রাখিত; আর স্থাবর অস্থাবর সমস্ত বিক্রয় করিয়া, যাহার যেমন প্রয়োজন, তদনুসারে সকলকে অংশ করিয়া দিত । আর তাহারা প্রতিদিন একচিত্তে ধর্ম্মধামে নিবিষ্ট থাকিয়া এবং বাটীতে রুটি ভাঙ্গিয়া উল্লাসে ও হৃদয়ের সরলতায় খাদ্য গ্রহণ করিত; তাহারা ঈশ্বরের প্রশংসা করিত, এবং সমস্ত লোকের প্রীতির পাত্র হইল । আর যাহারা পরিত্রাণ পাইতেছিল, প্রভু দিন দিন তাহাদিগকে তাহাদের সহিত সংযুক্ত করিতেন (প্রেরিত ২:৪২-৪৭) ।
কর্তৃপক্ষের সম্মুখে পিতর এবং যোহনের মত প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করতে আমাদের কি মুল্য প্রদান করতে হবে ?
ঈশ্বরের কথা অপেক্ষা আপনাদের কথা শোনা ঈশ্বরের সাক্ষাতে বিহিত কিনা, আপনারা বিচার করুন; কারণ আমরা যাহা দেখিয়াছি ও শুনিয়াছি, তাহা না বলিয়া থাকিতে পারি না (প্রেরিত ৪:১৯-২০) ।
আমাদের কি করতে হবে যেন প্রভু সেই সাহসিকতা এবং মহান অলৌকিক কাজ ও চিহ্ন কার্য্য প্রদান করেন, যা সমগ্র প্রেরিত পুস্তকে লিপিবদ্ধ আছে ?
আর এখন হে প্রভু উহাদের ভয় প্রদর্শনের প্রতি দৃষ্টিপাত কর; এবং তোমার এই দাসদিগকে সম্পূর্ণ সাহসের সহিত তোমার বাক্য বলিবার ক্ষমতা দেও, আরোগ্য – দানার্থে তোমার হস্ত বিস্তার কর; আর তোমার পবিত্র দাস যীশুর নামে চিহ্ন – কার্য্য ও অদ্ভুত লক্ষণ সাধিত হয় । তাঁহারা প্রার্থনা করিলে, যে স্থানে তাঁহারা সমবেত হইয়াছিলেন, সেই স্থান কাঁপিয়া উঠিল; এবং তাঁহারা সকলেই পবিত্রআত্মায় পরিপূর্ণ হইলেন ও সাহস পূর্ব্বক ঈশ্বরের বাক্য বলিতে থাকিলেন (প্রেরিত ৪:২৯-৩১) ।
প্রেরিত ৭ অধ্যায়ে স্তিফানের মত আমরাও মৃত্যুবরণ করতে প্রস্তুত হবার জন্য আমাদের কি করতে হবে ?
সুসমাচার ছড়িয়ে পড়ার কারণে প্রেরিত ৮:১-৩ পদে লিপিবদ্ধ অত্যাচারের মতো মহান তাড়না সহ্য করার জন্য প্রস্তুত হতে আমাদের কি মুল্য প্রদান করতে হবে ?
আমাদের “শত্রুদের” কাছে সুসমাচার পৌঁছানোর জন্য আমাদের কি করতে হবে, যে ভাবে ফিলিপ শমরিয়াতে সুসমাচার প্রচার করেছিলেন যা প্রেরিত ৮:৫-৮ পদে লেখা আছে ?
আমাদের কি মূল্য প্রদান করতে হবে সেই সমস্ত লোকদের জন্য প্রার্থনা করতে এবং সুসমাচার প্রচার করে তাদের জীবন পরিবর্তন করতে যারা খ্রীষ্টানদের উপর এই সময় অত্যাচার করে চলেছে ? আমাদেরকে বিশ্বাস করতে হবে যে তারাও পৌলের মত মহান মিশনারীতে পরিবর্তিত হতে পারে ?
নিজেদের স্বার্থপরতা থেকে মুক্ত হতে আমাদের কি মুল্য প্রদান করতে হবে, যেন আমরা অন্যদেরকেও সমানভাবে গুরুত্ব দিতে পারি, এবং উপলব্ধি করতে পারি পিতর যেমন বলেছিলেনঃ
“আমি সত্যি বুঝিলাম, ঈশ্বর মুখাপেক্ষা করেন না; কিন্তু প্রত্যেক জাতির মধ্যে যে কেহ তাঁহাকে ভয় করে এবং ধর্ম্মাচরণ করে, সে তাঁহার গ্রাহ্য হয়” (প্রেরিত ১০:৩৪-৩৫) ।
পৌলের মত কাজ করতে ও ক্লেশ ভোগ করতে আমাদের কি মুল্য প্রদান করতে হবে, যেমন পৌল বলেছেনঃ
আমি অধিকতররূপে; আমি পরিশ্রমে অতিমাত্ররূপে, কারাবন্ধনে অতিমাত্ররূপে, প্রহারে অতিরিক্তরূপে, প্রাণসংশয়ে অনেক বার৷ যিহূদীদের হইতে পাঁচবার ঊনচল্লিশ আঘাত প্রাপ্ত হইয়াছি । তিন বার বেত্রাঘাত, এক বার প্রস্তরাঘাত, তিন বার নৌকাভঙ্গ সহ্য করিয়াছি, অগাধ জলে এক দিবারাত্র যাপন করিয়াছি; যাত্রায় অনেক বার, নদীসঙ্কটে, স্বজাতি-ঘটিত সঙ্কটে, পরজাতি-ঘটিত সঙ্কটে, নগরসঙ্কটে, মরুসঙ্কটে, সমুদ্রসঙ্কটে, ভাক্ত- ভ্রাতৃগণের মধ্যে ঘটিত সঙ্কটে, পরিশ্রমে ও আয়াসে, অনেক বার নিদ্রার অভাবে, ক্ষুধায় ও তৃষ্ণায়, অনেক বার অনাহারে, শীতে ও উলঙ্গতায় । আর সকল বিষয়ের কথা থাকুক, একটি বিষয় প্রতিদিন আমার উপরে চাপিয়া রহিয়াছে – সমস্ত মণ্ডলীর চিন্তা (২য় করিন্থীয় ১১:২৩খ-২৮) ।
নতুন নিয়মের সময়ে যেরূপ মণ্ডলী স্থাপিত হয়েছিল সেইরূপ মণ্ডলী স্থাপনের জন্য আমাদের কি মূল্য প্রদান করতে হবে ?
প্রত্যেক জাতির কাছে সাক্ষ্যরূপে সুসমাচার প্রচার করার জন্য আমাদের কি মুল্য প্রদান করতে হবে (মথি ২৪:১৪) ?
স্ট্যান পার্কস, পি এইচ ডিঃ ২৪:১৪ সন্ধির (সুবিধার্থী দল), বিয়ন্ড (ভাইস প্রেসিডেন্ট গ্লোবল স্ট্রাটেজিস), এবং এথনে (নেতৃত্বদানকারী দল) এর সাথে কাজ করেছেন । তিনি বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সিপিএমের শিক্ষক ও প্রশিক্ষক এবং তিনি ১৯৯৪ সাল থেকে সুসমাচার অপ্রাপ্তদের মধ্যে বসবাস ও তাদের সেবা করেছেন৷
এই উপাদানটি ২৪:১৪ বই-এর ১৩৯-১৪৪, ১৪৭ পৃষ্ঠায় প্রথম উল্লেখিত হয় – সমস্ত লোকেদের পক্ষে সাক্ষ্য ২৪:১৪ থেকে বা অ্যামাজন-এ উপলব্ধ৷
—
- পরবর্তী ৭টি অনুচ্ছেদ https://justinlong.org/2015/01/unreached-is-not-unevangelized-is-not-unengaged/ এই লিঙ্কটি থেকে উদ্ধৃত করা হয়েছে এবং সম্পাদনা করা হয়েছে । এই শব্দগুলি সম্পর্কে আরো জানতে এই প্রবন্ধটি পাঠ করুন ।
- যেভাবে “২৪:১৪ দর্শন”: ২৪:১৪ এ ব্যাখ্যা করা হয়েছে – সমস্ত লোকেদের প্রতি একটি সাক্ষ্য, পৃষ্ঠা. ২-৩৷
- এ গ্রীক-ইংলিশ লেক্সিকন অফ দ্য নিউ টেস্টামেন্ট অ্যান্ড আদার আরলি ক্রিস্টিয়ান লিটারেচার, তৃতীয় সংস্করণ, ২০০০ । ফ্রেডরিক উইলিয়াম ড্যাঙ্কার-এর দ্বারা সংস্করণ এবং সম্পাদন করা হয়েছে, যা পূর্ববর্তী ইংরাজী সংস্করণের উপরে আধারিত, যা লিখেছিলেন ডব্লুই. এফ আর্ন্ড, এফ. ডব্লুই. গিঙরিচ, এবং এফ. ডব্লুই ড্যাঙ্কার । শিকাগো এবং লণ্ডনঃ ইউনিভার্সিটি অফ চিকাগো প্রেস, পৃষ্ঠা ২৭৬ ।
- এই বৃহৎ সংখ্যক মানুষদের গণনা করা বা তথ্য সংগ্রহ করা সহজ কাজ নয়, সে কারণে এটি একটি আনুমানিক সংখ্যা ।